এ রূপরেখায় শুধু কী পড়ানো হবে তাই নয়, কীভাবে পড়ানো হবে, কোন বিষয়ের কোন দক্ষতা গড়ে তোলা হবে, আর শিক্ষার চূড়ান্ত উদ্দেশ্য কী—সব কিছুই বিস্তারিতভাবে লেখা আছে। শিক্ষকরা এই নথিকে ভিত্তি করে তাঁদের পাঠদান ও ক্লাসরুম পরিচালনা করতে পারবেন।
এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মূল্যায়ন পদ্ধতি। এখানে তিন ধরনের মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে—
1. Assessment of Learning – অর্থাৎ যা শিখেছে তার পরীক্ষা নেওয়া (বর্তমানে প্রচলিত মুখস্থ-ভিত্তিক পরীক্ষা)।
2. Assessment for Learning – শেখার প্রক্রিয়াকে সমর্থন করার জন্য মূল্যায়ন।
3. Assessment as Learning – শিক্ষার্থীদের আত্ম-পর্যালোচনা ও নিজস্ব শেখার অগ্রগতি বোঝার জন্য মূল্যায়ন।
দীর্ঘদিন ধরে আমরা মূলত "Assessment of Learning"-এর উপর নির্ভরশীল ছিলাম, যা মুখস্থ বিদ্যা বাড়ালেও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা কমিয়ে দেয়। নতুন নীতি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধরণের মূল্যায়নকে উৎসাহিত করছে—যার অন্যতম হাতিয়ার Open Book Examination (OBE)।
অনেকেই প্রথমে শুনে ভাবতে পারেন—“বই খুলে পরীক্ষা দিলে তো সবাই পাস করবে!” কিন্তু বাস্তবটা উল্টো। ওপেন বুক পরীক্ষা মুখস্থ বিদ্যা নয়, বরং বোঝা, প্রয়োগ, বিশ্লেষণ, এবং মূল্যায়ন—এই উচ্চস্তরের চিন্তাশক্তি (HOTS) যাচাই করে।
এখানে প্রশ্ন সরাসরি বই থেকে কপি করার মতো হয় না। বরং—
১. বাস্তব জীবনের প্রেক্ষাপটে সমস্যার সমাধান,
২. নতুন পরিস্থিতিতে নিজ বিষয়ে জ্ঞানের প্রয়োগ,
৩. তুলনামূলক বিশ্লেষণ,
৪. যুক্তি তর্ক দিয়ে কথা বলা সিদ্ধান্ত গ্রহণ
এই ধরণের প্রশ্ন করতে হলে প্রশ্নপত্র প্রস্তুতকারীদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আর শিক্ষকদের স্মার্ট পেডাগজি (ক্লাসরুম শিক্ষণের পদ্ধতি) ব্যবহার করতে হবে, যাতে সারা বছরের ক্লাসেই শিক্ষার্থীরা সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা চর্চা করে।
১. মুখস্থ বিদ্যার উপর নির্ভরতা কমবে
২. শেখা হবে গভীর ও প্রাসঙ্গিক
৩. শিক্ষার্থীরা বাস্তব সমস্যা সমাধানে দক্ষ হবে
৪. শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য শিক্ষাদান আরও সৃজনশীল হবে
CBSE ইতিমধ্যেই আগামী শিক্ষাবর্ষে এই পদ্ধতি চালুর ইঙ্গিত দিয়েছে, এবং যদি সফল হয়, তবে এটি ভারতের স্কুল শিক্ষায় এক নতুন যুগের সূচনা হতে পারে।
